ভুতুড়ে যত মোবাইল ফোন
এখনকার স্মার্টফোনগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী আর নকশায়ও দুর্দান্ত। যেমন আইফোন ৭, গ্যালাক্সি এস ৭ এজ, এলজি ভি২০, এইচটিসি ১০, এমনকি ওয়ানপ্লাস থ্রির নকশা দুর্দান্ত। কিন্তু প্রায় সব স্মার্টফোনের গড়ন একই রকম হওয়াতে ক্রেতারা কিছুটা বিরক্ত। এতে স্মার্টফোনের উদ্ভাবনী নকশায় পরিবর্তন কম হচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। কিন্তু আগের ফিচার ফোন বা সেমিস্মার্টফোনগুলোর ক্ষেত্রে বিষয়টি ছিল ব্যতিক্রম। মোবাইল নির্মাতারা ক্রেতা আকৃষ্ট করতে অদ্ভুত নকশার ফোন তৈরি করেছেন। চলুন, জেনে আসি এ ধরনের কিছু ভুতুড়ে নকশার মোবাইল ফোন সম্পর্কে:
২০০৩ সালে স্যামসাং বাজারে আনে এই ফোনটি। ‘দ্য ম্যাট্রিক্স’ ছবির ভক্তদের লক্ষ্য করে বাজারে ছাড়া ফোনটি। পরে ম্যাট্রিক্স রিলোডেড নামে এই সিরিজে আরও একটি ফোন ছাড়ে। এনপিএইচ-এন ২৭০ নামের ফোনটিতে ছোট আকারের একটি স্ক্রিন ছিল। এতে ম্যাট্রিক্স থিমের ওয়ালপেপার, স্ক্রিনসেভার ও রিংটোন আগে থেকে ভর্তি করা ছিল। ১২৮ বাই ১৬০ পিক্সেলের এলসিডি ডিসপ্লের ফোনটির ব্যাটারি ছিল এক হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার।
নারীদের জন্য সিমেন্স এই মডেল বাজারে ছেড়েছিল। ফ্লিপ স্টাইলের ফোনটিতে মেকআপের জন্য আয়নার ব্যবস্থা ছিল। ২০০৩ সালের এই ফোনটিতে ছিল গোলাকার কিপ্যাড। ১০১ বাই ৮০ পিক্সেলের এফএসটিএন ডিসপ্লে ও লিআয়ন ব্যাটারি ছিল।
নকিয়া ব্র্যান্ডের ফোনে দামি ধাতু ব্যবহার করে পৃথক সংস্করণ তৈরিতে কাজ করে ভারচু। তাদের একটি পরিচিত সিরিজের নাম কোবরা। এতে ভুতুড়ে এক নকশা ব্যবহার করা হয়। এতে ফোনের কাঠামোর বাইরে সাপের নকশা করা থাকে। এতে ব্যবহার করা হয় হীরা।
প্রযুক্তি বিশ্বকে দারুণ কিছু নকশার ফোন উপহার দিয়েছে ফিনল্যান্ডের মোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নকিয়া। এর মধ্যে ভুতুড়ে নকশা ৭৬০০ মডেলটির। ২০০৩ সালে বাজারে আসা ফোনটিতে দুই ইঞ্চি ডিসপ্লে ছিল। ৮৫০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারির ফোনটিতে জাভা গেম, পলিফোনিক রিংটোন ডাউনলোডের সুবিধা ছিল।
যাঁরা চকলেট পছন্দ করেন, তাঁদের কথা ভেবে এলজি চকলেটের মতো দেখতে এ ফোন বাজারে ছাড়ে। বিএল ৪০ ফোনটিতে ১ দশমিক ১ জিবি স্টোরেজ, এক হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি ও ৫ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা ছিল।
লিপস্টিক ফোন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল ৭২৮০ মডেলটি। অদ্ভুত গঠনের এই ফোন ২০০৫ সালে বাজারে ছাড়ে নকিয়া। ৫০ এমবি মেমোরি, এফএম রেডিও ও ৭০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি ছিল।
২০০৫ সালে স্যামসাং বাজারে ছাড়ে গয়নার বাক্সসদৃশ একটি মোবাইল ফোন। এর কি-বোর্ড ছিল বৃত্তাকার। এতে সিমকার্ড ভেতরে ঢোকাতে স্ক্রুড্রাইভার দরকার হতো। ৮০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারির ফোনটিতে ভিজিএ ক্যামেরা ও ৩২০ বাই ২৪০ পিক্সেলের ডিসপ্লে ছিল।
মোবাইল ফোনের দুনিয়ায় জাপানের তোশিবা বড় কোনো নাম নয়। তবে জি৪৫০ মডেল বাজারে এনে ক্রেতাদের ধরতে চেয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৮ সালে বাজারে আনা থ্রিডিস্ক নকশার ফোনটির ওপরে ৯৬ বাই ৩৯ পিক্সেলের ডিসপ্লে, মাঝখানের ও শেষের ডিস্কে বোতাম ছিল। ৫৭ গ্রাম ওজনের ফোনটি মডেম ও ইউএসবি ডিভাইস হিসেবে ব্যবহার করা যেত।
২০১৪ সালে নতুন একটি স্মার্টফোন আনে ব্ল্যাকবেরি। ফোনটি দেখতে অনেকটা পাসপোর্টের মতো। ব্ল্যাকবেরির বড় মাপের এ ফোনে রয়েছে কি-বোর্ডের সুবিধা। সাড়ে চার ইঞ্চি মাপের ডিসপ্লেযুক্ত স্মার্টফোনটির সামনে রয়েছে ২ মেগাপিক্সেল ও পেছনে ১৩ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। টাচ সেনসেটিভ কি-বোর্ডের এই স্মার্টফোনে আছে ব্ল্যাকবেরি ১০.৩ অপারেটিং সিস্টেম। কোয়াড-কোর সিপিইউ ও ৩ জিবি র্যাম ছাড়াও স্মার্টফোনটির ব্যাটারি ৩৪৫০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের।