Welcome to Our Blog

হচ্ছে কী বিল্ডিং এইটে?

by Admin for IT News 21-Mar-2017 0 Comments

বিষয়টি অতি গোপনীয়। তাই এখনো কিছু দৃশ্যমান নয়। কেবল কার্যক্রম দেখে আঁচ করা যায়। গোপনে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করেছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক। এবার শুধু সফটওয়্যার হিসেবে নয়, ফেসবুক কাজ করছে হার্ডওয়্যার নিয়েও।

ফেসবুক ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, ফেসবুক খুব গোপনে কিছু কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটির ভেতরেই অতি গোপনীয় এক বিভাগ আছে, যা বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে কাজ করছে। এই বিভাগের নাম ‘বিল্ডিং এইট’। এখানে কমপক্ষে চারটি গোপন হার্ডওয়্যার প্রকল্প চলছে, যার কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি ফেসবুক। এর মধ্যে একটি প্রকল্পের সঙ্গে ক্যামেরা ও অগমেনটেড রিয়্যালিটি যুক্ত। এ ছাড়া ড্রোন নিয়েও গোপন গবেষণা চালাচ্ছে ফেসবুক। প্রযুক্তি ও ব্যবসাবিষয়ক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডার এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ভার্চ্যুয়াল রিয়্যালিটি নিয়ে কাজ করছে ফেসবুক। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে দেখছেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। ছবি: রয়টার্স।
ভার্চ্যুয়াল রিয়্যালিটি নিয়ে কাজ করছে ফেসবুক। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে দেখছেন ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। ছবি: রয়টার্স।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, বিল্ডিং এইট টিমের কাছ থেকে এখনো কোনো পণ্য বাজারে আসেনি। এ বিষয়ে জ্ঞাত সূত্র বলছে, শিগগিরই ফেসবুকের এই দল প্রযুক্তি বিশ্বকে চমক দেব। বাস্তবের দুনিয়ার সঙ্গে যায়—এমন প্রযুক্তিপণ্য দ্রুত বাজারে আনতে কাজ করছে দলটি।

ফেসবুকের হার্ডওয়্যার দুনিয়ায় পা রাখা বিষয়টিকে একাধারে ঝুঁকিপূর্ণ ও উচ্চাভিলাষী বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, হার্ডওয়্যার দুনিয়ায় অভিজ্ঞতাহীন ফেসবুককে অ্যাপল, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে। লক্ষণীয়, ফেসবুক যেভাবে বিল্ডিং এইটকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে, এতে এটি কোনো ছেলেখেলা নয়। নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের দক্ষতা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, গ্রাহকপণ্য বিক্রির জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে ফেসবুক।

ফেসবুক মস্তিষ্ক স্ক্যান করার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। ছবি: বিজনেস ইনসাইডার।
ফেসবুক মস্তিষ্ক স্ক্যান করার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে। ছবি: বিজনেস ইনসাইডার।
ফেসবুকের বিল্ডিং এইটের বর্তমান দুটি প্রকল্প হচ্ছে ক্যামেরা, অগমেনটেড রিয়্যালিটি ও ড্রোন। অন্যগুলো হচ্ছে মস্তিষ্ক স্ক্যান (ব্রেন-স্ক্যানিং) ও মেডিকেল অ্যাপ্লিকেশন। ব্রেন স্ক্যানিং প্রকল্পটির নেতৃত্বে আছেন জন হপকিন্সের একজন সাবেক স্নায়ুবিশেষজ্ঞ। চিকিৎসাসংক্রান্ত অ্যাপ্লিকেশন কার্যক্রম দেখছেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেসবুকের বিল্ডিং এইট এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা গুগলের অ্যাডভান্সড টেকনোলজি ও প্রজেক্ট গ্রুপের (এটিএপি) মতো। এটাকে গুগলের গোপন গবেষণাগার-খ্যাত এক্স ল্যাবের সঙ্গে তুলনা করা যায়। এখানে অদ্ভুত ধরনের ধারণাগুলো নিয়ে কাজ করে বাস্তবসম্মত পণ্য বা সেবা তৈরিতে কাজ করা হয়। এই গবেষণাগার থেকেই গুগলের স্বয়ংক্রিয় গাড়ির জন্ম হয়েছে।

বিল্ডিং এইটের কারিগরি-প্রধানেরা প্রধান নির্বাহীর মতোই খাতির পান। তাঁদের ধারণাগুলোকে বাস্তবে রূপ দিতে দুই বছর সময় পান। এসব সেবা দুই বছরের মধ্যে বিক্রির উপযোগী বা ফেসবুকের বা সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কাজে লাগার উপযোগী হতে হবে। বর্তমানে অকুলাস ভিআর, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামেরও মালিক ফেসবুক।

ড্রোন নিয়েও কাজ করছে ফেসবুক। ছবি: রয়টার্স।
ড্রোন নিয়েও কাজ করছে ফেসবুক। ছবি: রয়টার্স।
২০১৮ সালে ফেসবুকের বিল্ডিং এইটের কর্মীদের প্রথম ডেডলাইন শেষ হচ্ছে। সেখানে কাজ করছেন, ফ্রাঙ্ক ডেলার্ট নামের একজন কম্পিউটার ভিশন ও রোবোটিকস বিশেষজ্ঞ। ফেসবুকের প্রকল্পে তাঁর যুক্ত থাকার বিষয়টি প্রমাণ করে গ্রাহকের উপযোগী ড্রোন তৈরিতে কাজ করছে ফেসবুক। ফেসবুকে যোগ দেওয়ার আগে ডেলার্ট স্কাইডিও নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান গবেষক ছিলেন। ওই প্রতিষ্ঠানের তৈরি ড্রোন স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোনো ব্যক্তিকে নজরদারিতে রাখতে পারে। স্কাইডিওর সাবেক হার্ডওয়্যার বিভাগের প্রধান স্টিফেন ম্যাকক্লুরাও ফেসবুকের বিল্ডিং এইটের হার্ডওয়্যার গ্রুপে যোগ দিয়েছেন।

ফেসবুকের ভেতরের অন্য বেশ কিছু বিভাগ থেকেও বিল্ডিং এইটের জন্য কর্মী আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফেসবুকের অ্যাকুইলা নামের প্রকল্পের প্রকৌশলীরা। অ্যাকুইলা প্রকল্পের মাধ্যমে আকাশে ওড়ানো বড় ড্রোন থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট-সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে ফেসবুক।

ফেসবুকের বিল্ডিং এইটের বয়স যদিও এক বছরের কম, তারপরও এই বিভাগ থেকে পণ্য বাজারে ছাড়ার তোড়জোড় শুরু হচ্ছে। সম্প্রতি ফেসবুকের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনবল নিয়োগের বিষয়টি সেটা প্রমাণ করেছে। একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে কর্মীর দায়িত্ব হিসেবে লেখা হয়েছে, কর্মীকে ফেসবুকের কনজ্যুমার হার্ডওয়্যার বিক্রির কাজ করতে হবে।

বাজার বিশ্লেষক লুপ ভেঞ্চার পার্টনার্স জিন মানস্টারের মতে, পণ্য বাজারে ছাড়া ও লাখো গ্রাহকের কাছে হার্ডওয়্যার বিক্রি ফেসবুকের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ, বর্তমানে ফেসবুকের অকুলাস ভিআর হেডসেট বিক্রির খুব স্বল্প অভিজ্ঞতা রয়েছে।

তবে ফেসবুকের প্রচেষ্টা দেখে মনে হচ্ছে, অগমেনটেড রিয়্যালিটির ক্ষেত্রটিকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি। অগমেনটেড রিয়্যালিটিকে প্রযুক্তির পরবর্তী বড় বাজার বলে মনে করা হচ্ছে।

মানস্টার বলেন, ফেসবুক বুঝতে পেরেছে, পরবর্তী বড় পরিবর্তনের অংশ হতে চায় তারা। এ ক্ষেত্রে তাদের দ্রুত এগোতে হবে।

More from my site

Leave a Reply

Blog Categories

Popular Posts