Welcome to Our Blog

পৃথিবীটাও শুক্র গ্রহের মতো হয়ে যেতে পারে: স্টিফেন হকিং

by Admin for dhakanews 11-Jul-2017 0 Comments

বিগ ব্যাং থিওরি খ্যাত ব্রিটিশ পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং বলেছেন, চলমান জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় মানুষেরা ব্যর্থ হলে পৃথিবীটাও একসময় শুক্র গ্রহের মতো হয়ে যেতে পারে। যেখানে মহাসাগরগুলো হবে আগুনের তাপে ফুটন্ত পানির পাত্রের মতো এবং আকাশ থেকে পড়বে এসিড বৃষ্টি। সম্প্রতি বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাতকারে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই বিপৎসীমা অতিক্রম করে ফেলেছি। আর বেশি দেরি করলে বিশ্ব জলবায়ু সংকট পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড পৃথিবীকে পুরোপুরি ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যার ফলে পৃথিবীটাও শুক্র গ্রহের মতো হয়ে যেতে পারে। যেখানে তাপমাত্রা হবে ২৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বৃষ্টির সঙ্গে পড়বে সালফিউরিক অ্যাসিড।

তবে বেশিরভাগ জলবায়ু বিশেষজ্ঞের মতে, শুক্র গ্রহের তুলনায় সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব অনেক বেশি। আর পৃথিবীর যে রাসায়নিক গঠন তাতে এর বায়ুমণ্ডলে কখনোই অতো ভারী কার্বন ডাই অক্সাইডের আস্তরণ তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। সূতরাং পৃথিবীর তাপমাত্রাও কখনো ২৫০ ডিগ্রিতে পৌঁছাবে না।

কিন্তু, জলবায়ু সংকট চরমে পৌঁছালে পৃথিবীটা মানুষের বসবাসের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়তে পারে বলে হকিং যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তা সত্যি।
গত সাড়ে চারশ কোটি বছরের ইতিহাসে পৃথিবীর জলবায়ু বেশ কয়েকবার নাটকীয়ভাবে বদলেছে। ২৫০ কোটি বছর আগে একবার পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল অত্যধিক হারে। এরপর ৬৫ কোটি বছর আগে পুরো পৃথিবী বরফে ঢেকে গিয়েছিল। আর ডায়নোসর যুগে পৃথিবীর তাপমাত্রা বর্তমানের চেয়ে গড়ে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। কারণ সেসময় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল।

আর ২৫ কোটি ২০ লাখ বছর আগে প্রচুর পরিমাণে কার্বন নি:সরণের ফলে পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্বের গণবিলুপ্তি ঘটেছিল। সেসময় সমুদ্রের পানিতে অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় সামুদ্রিক প্রাণের ৯৫%ই বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।

সূতরাং চলমান জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যার্থ হলে পৃথিবীতে ফের একই ধরনের বিপর্যয় নেমে আসাটা অসম্ভব কিছু নয়।

বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা মানুষেরা যদি পৃথিবীতে থাকা সব জীবাশ্ম জ্বালানি মাটির নিচ থেকে তুলে ব্যবহার করে ফেলে তাহলে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বর্তমানের চেয়ে ১০ গুন বেড়ে যাবে। যার ফলে তাপমাত্রাও বাড়বে অসহনীয় হারে এবং সমুদ্রের উচ্চতাও বেড়ে যাবে অন্তত কয়েকশ ফুট। সমুদ্রের উচ্চতা বাড়লে তার পরিণতি কী হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। আর পৃথিবীর ওপর এই বিপর্যয় নেমে আসতেও খুব বেশি দিন লাগবে না। জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ২০৫০ থেকে ১০০ সালের মধ্যেই আমাদের এই গ্রহটির চেহারা পাল্টে যাবে ভয়ংকরভাবে।

সূত্র: ফক্স নিউজ

More from my site

Leave a Reply